Biloy Mrong

Biloy Mrong

Saturday, June 30, 2018

রাশিয়ার দর্শণীয় স্থান সমূহ


রাশিয়ার দর্শণীয় স্থান সমূহ
 প্রাকৃতিক নৈসর্গিক সৌন্দর্য, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, জ্ঞান-বিজ্ঞান, ব্যবসা বানিজ্য সব কিছুর জন্যই সমৃদ্ধ বিশ্বের বৃহত্তম দেশ রাশিয়ায়। ‍দিগন্তের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ঘুরে বেড়ালেও দেখে শেষ করা যাবেনা রূপের আধার রাশিয়ার লীলাভূমি। রুশ সংস্কৃতি ও তাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং তাদের আতিথেয়তা আপনার হৃদয় মনকে মুগ্ধ করবে। সেই সাথে পরিচিত হয়ে আসতে পারেন তাদের অসংখ্য বিস্ময়ের স্থান গুলোর সাথে। যেগুলো আপনাকে সেখানে আবার ঘরতে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দিবে। ভ্রমণ পিপাসু যে কেউ খুব সহজে ঘুরে আসতে পারেন এশিয়া ইউরোপ মিশ্রিত বিশাল এই দেশে। সেখানকার আকর্ষনীয় স্থানগুলোর মধ্যে আপনি দেখে আসতে পারেন রাজধানী মস্কো, সেন্ট পিটার্সবার্গ, বইকাল লেক, মাউন্ট এলব্রাস সহ আরও অনেক অসাধারণ নিদর্শণ।

The Moscow 

মস্কোঃ

মস্কো ইউরোপীয়দের জন্য অন্যতম জনপ্রিয় শহর। এটি বিশ্বের বৃহত্তম দেশ রাশিয়ার রাজধানী এবং ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশের একটি ঐতিহাসিক শহর। মস্কো নদীর তীরে এর অবস্থান। ক্রেমলিন এবং রেড স্কোয়ার এর জন্য বিখ্যাত এই শহর। এটি লেনিনের সমাধিসৌধ বাড়ি, ঐতিহাসিক জাদুঘর, সেন্ট বেসিলের ক্যাথিড্রাল, পেঁয়াজ আকৃতিরর গম্বুজগুলির জন্য খুব পরিচিত। অনেক ভোজন বিলাস মানুষ রুশ ঐতিহ্যগত খাবার খেতে এখানে ঘুরতে আসেন। ১৯৮০ সালে এখানে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠিত হয়েছিলো।

Saint Petersburg  


সেন্ট পিটার্সবার্গ :

এটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত।  কয়েকবার নাম পরিবতনের পর ১৯৯১ সালে সেন্ট পিটার্সবার্গ নামে চূড়ান্ত করা হয় এর নাম।  এটি রাশিয়ার ২য় বৃহত্তম শহর। পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তর প্রান্তে এর অবস্থান। দশ লক্ষের বেশি জনসংখ্যার শহর এটি। এখানকার ঐতিহাসিক কেন্দ্র ও স্মৃতিসৌধগুলো ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলোর একটি। সেন্ট পিটার্সবার্গে অবস্থিত হারমিটেজ জাদুঘর বিশ্বের বৃহত্তম জাদুঘর গুলো মধ্যে অন্যতম। এটি ইউরোপের একটি প্রধান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং বাল্টিক সাগর তীর হওয়ায় এটি রাশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ  সমুদ্র বন্দর।

Lake Baikal


বৈকাল হ্রদ বা লেকঃ

বাংলাদেশে ছোট বড় বেশ কয়েকটি সুন্দর হ্রদ বা লেক রয়েছে। লেকগুলোর মধ্যে বগা  লেক, চট্টগ্রামের ফয়ের লেক, কাপ্তাই লেক, মাধবপুর লেক নেত্রকোনার চুনাপাথর লেক। এর সব গুলোই প্রায় মানুষের হাতের তৈরী। কিন্তু রাশিয়ার সাইবেরিয়া শহরে অবস্থিত লেকটি সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি লেক। যেটি প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্টি হয়েছে এবং এটি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ও প্রাচীন হ্রদ বা  বিশ্বের সবচেয়ে গভীরতম হ্রদ যার গভীরতা পাঁচ হাজার ফুট। চারিদিকে পাহাড়ে ঘেরা এই হ্রদের আশেপাশে অসংখ্য গাছপালা ও জীতজন্তু রয়েছে যারা হ্রদের জল খেয়ে বেচে আছে। বিস্তির্ণ এই হ্রদের জল স্বচ্ছ এবং বিশুদ্ধ। অপরূপ সৌন্দর্যের তাজা পরিবেশে মুগ্ধ হয়ে অনেক পর্যটক এখানে ঘুরতে আসেন।

Mount Elbrus

 মাউন্ট এলব্রাসঃ

মাউন্ট এলব্রাস লক্ষ লক্ষ বছর আগে গঠিত হয়েছিলো। এটি ইউরোপের সবচেয়ে উচু পাহাড় এবং সেভেন সামিট গুলির মধ্যে একটি। এছাড়াও এটা বিশ্বের সর্ববৃহৎ ও সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গগুলোর মধ্যে অন্যতম । এর উচ্চতা ১৮,৫১০ ফুট (৫,৬৪২ মিটার)। এটাকে এখন একটি বিলুপ্ত আগ্নেয়গিরি বলা হয়ে থাকে।

সাজদালঃ
রাশিয়ার উত্তরপূর্বে অবস্থিত মস্কো শহরের একটি প্রাচীন শহর সাজদাল। যারা রাশিয়ার ঐতিহাসিক স্থাপত্য এর অভিজ্ঞতা নিতে চাই ও এর সৌন্দর্য দেখতে চান তারা এখানে আসতে পারেন। এখানকার কিছু স্মারক ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট এর তালিকা ভুক্ত করা হয়।  এখানে দেখতে পাবেন কিছু স্মৃতিসৌধ, সেন্ট নিকোলাসের কাঠের চার্চ, ইথিউইসের মঠ, মধ্যযুগীয় কনভেন্ট ইত্যাদি দেখতে পাবেন। যেগুলো আপনার দেখার তৃষ্ণাকে তৃপ্তি ‍দিবে।

পৃথিবীর দীর্ঘতম রেলপথঃ
১৮৯১ থেকে ১৯১৬ সালের সময়ে নির্মিত রাশিয়ার মস্কো থেকে ভূদিভোসটক পর্যন্ত রেলপথই বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ রেলপথ। এটা ট্রান্স সাইবেরিয়ান রেল পথ নামে পরিচিত। এটি ৫ হাজার ৭৭৬ মাইল পথ অতিক্রম করেছে। আর এ বিখ্যাত রেলপথ  তৈরী করতে সময় লেগেছে প্রায় ২৫ বছর। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে এ রেলপথ এশিয়ার ও ইউরোপের মধ্যে যোগাযোগ এর জন্য অন্যতম মাধ্যম ছিলো। এছাড়া রাশিয়ার মোট রপ্তানীর ৩০ ভাগ সম্পন্ন হয় এই রেলপথ দিয়েই। এখন এই রেলপথের আরও পরিবর্তনের জন্য কাজ করছে বর্তমান কর্তৃপক্ষ।
রাশিয়ার  পাতাল রেলপথ সেখানকার দর্শণীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। পাতাল রেলপথের স্থাপত্য নিদর্শন গুলো মুগ্ধতায় ভরিয়ে তোলবে যেকোন পর্যটককে। রাশিয়ায় গেলে এই পাতাল রেল পরিদর্শন না করলে অপূর্ণ থেকে যাবে আপনার ভ্রমণ।


রাশিয়া ২০১৮ সালে ফুটবল বিশ্বকাপ সফল ভাবে আয়োজন করে নিজেদেরকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। নিজের দেশকে তারা পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় করে তোলেছে। যারা একবার রাশিয়া ভ্রমণ করবে তারা রাশিয়ার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও তাদের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়ে বার বার সেখানে ফিরে যেতে চাইবে।

0 Post a Comment: