সিলেটের বিভিন্ন স্থানে মনিপুরীদের বসবাস হলেও সবচেয়ে বেশি মনিপুরী বসবাস করে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার, আদমপুর, তিলকপুর, মাধবপুর, মঙ্গলপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে।মনিপুরী গ্রামে বেড়াতে গেলে যে বিষয়টা চোখে পরবে সেটা হলো প্রায় প্রত্যেকটা বাড়িতে কাপড় বুননের তাঁত রয়েছে। একদিন নিজেদের প্রয়োজনের জন্য কাপড় বুনতো তারা । নিজেদের প্রয়োজন থেকে আজ ধীরে ধীরে দেশীয় কাপড়ের চাহিদাও পূরণ করছে মনিপুরী তাঁতীরা।
মনিপুরীদের উৎপাদিত তাঁতপণ্যের মধ্যে রয়েছে- শাড়ি, শাল, ওড়না, থ্রি-পিস, গামছা, ফতুয়া, পাঞ্জাবি, বিছানার চাদর ইত্যাদি। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মনিপুরী শাড়ি। মনিপুরী শাড়ি এখন দেশীয় শাড়ি হিসেবে পরিচিত। রঙ ও নকশার জন্য মনিপুরী শাড়ি অন্যদের থেকে ভিন্ন। বিশেষ বৈশিষ্ট্যের জন্য মনিপুরী শাড়ির নকশা দেখলেই বোঝা যাবে এটি মনিপুরী শাড়ি।
শাড়ির প্রধান একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে রঙয়েরই শাড়ি হোক গাঢ় কিংবা হাল্কা পাড়ের রং হবে গাঢ়। সাধারণত শাড়ির পাড়ের নকশাটি হয়ে থাকে ত্রিভুজাকৃতির আর শাড়ির ভেতরে থাকে হালকা সুতায় বোনা লতা পাতার নকশা। এই নকশাটি মণিপুরীদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য। মণিপুরীদের বুননে রং আর নকশার রয়েছে এক অপূর্ব সমন্বয়। মণিপুরী শাড়ি যেমন দেখতে সুন্দর তেমনি ব্যবহারেও আরামদায়ক।
বর্তমানে মনিপুরী তাঁতিরা যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চেষ্টা করছেন নকশায় বৈচিত্র্য আনার । শাড়ির রঙ, নকশায়ও ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসছে। আঁচল, জমিন ও পাড়ে মন্দির প্রতিকৃতির পাশাপাশি বিভিন্ন নকশা যোগ করছে। চলেছে নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা। বর্তমানে রাজশাহীর সিল্ক সুতা দিয়েও মনিপুরী শাড়ি বুনা হচ্ছে। সিল্ক সুতার তৈরি মনিপুরী শাড়ি দেখতে সুন্দর, মসৃণ ও হালকা হওয়ায় বাজারে এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কোথায় পাওয়া যাবে: বর্তমানে আপনি অনলাইনেই মনিপুরী শাড়ি ক্রয় করতে পারবেন। ঢাকায় বিভিন্ন শাড়ির দোকানেও পাওয়া যাবে মনিপুরী শাড়ি। মৌলভীবাজার জেলার কমলগেঞ্জ, শ্রীমঙ্গল, সিলেট শহর সহ সিলেটের যে কোন জেলা শহরে আপনি পেতে পারেন মনিপুরী শাড়ি। শ্রীমঙ্গল সদর শহরে, রামনগর মনিপুরী পল্লীতে, নীলকন্ঠ এই কয়েকটি জায়গায় আপনি মনিপুরী শাড়ি পাবেন।
কেমন দাম হবে: শাড়ির সুতো ও ডিজাইনের ধরনের ওপর নির্ভর করবে দাম। দাম পরবে ৭৫০ থেকে ৭০০০ এর মধ্যেই । আপনার সাধ্যের মধ্যেই আপনি কিনে নিতে পারেন মনিপুরী শাড়ি।
1 Post a Comment:
সুন্দর হয়েছে লেখা। আমার খুব পছন্দের শাড়ি মনুপুরী।
Post a Comment